বিস্মৃত বলিদান : তিরুপুর কুমারনের অমর সংগ্রাম...


ভারতভূমিকে ইংরেজদের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য অসংখ্য বিপ্লবী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কারো শরীর ঝরেছে রক্তে, কেউ বা কাটিয়েছেন দীর্ঘ বছর জেলের অন্ধকার সেলে। ইংরেজদের ভয়ঙ্কর অত্যাচারেও ভারতমাতার দামাল ছেলেরা পিছু হটেনি। অন্তিম নিশ্বাস পর্যন্ত তারা স্বাধীনতার মন্ত্রে অনড় থেকেছেন।

এই দামাল সন্তানদেরই একজন ছিলেন তিরুপুর কুমারন। ইংরেজ শাসনের লাঠির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হলেও তিনি হার মানেননি। বুক উঁচু করে, গর্বভরে দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন আন্দোলনে।

১৯০৪ সালের ৪ অক্টোবর মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির চেন্নাইয়ে জন্ম নেন কুমারন। তরুণ বয়সে তিনি গড়ে তোলেন ‘দেশবন্ধু তরুণ সংঘ’ এবং ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের উপর ব্রিটিশ সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তিনি দৃঢ়ভাবে তা বাস্তবায়নের ডাক দেন। তাঁর নেতৃত্বে তিরুপুরে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন, যা দ্রুত সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে।

আন্দোলনের সময় ব্রিটিশ পুলিশ ভয়াবহ লাঠিচার্জ চালায়। একের পর এক লাঠির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয় কুমারনের দেহ, কিন্তু তাঁর হাতে ধরা পতাকা পড়ে যায়নি। শেষ পর্যন্ত ১৯৩২ সালের ১১ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন মাতৃভূমির স্বাধীনতার লড়াইয়ে।

যুবক তিরুপুর কুমারনের ত্যাগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—স্বাধীনতার জন্য কত ত্যাগ, কত রক্ত, কত সাহস লেগেছে। ইতিহাসের পাতায় তিনি অনেকটাই বিস্মৃত হলেও, তাঁর নাম আজও স্বাধীন ভারতের বাতাসে অমর হয়ে আছে।


✍️ লেখায় ::- প্রকাশ রায়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ